করোনাভাইরাসের (কোভিড১৯) সমস্যায় সারা বিশ্ব জর্জরিত। তবে ইদানিং অনেক দেশ ও অনেক সংস্থা দাবি করছে যে তারা এই মহামারী করোনা ভাইরাসের (কোভিড১৯) প্রতিষেধক আবিষ্কার করে ফেলেছে। অনেক প্রথমসারির মিডিয়াও এই খবর প্রকাশ করছে। ফলতঃ জনগণ এইসব খবর পড়ে একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে, সবাই ভাবছে যাক আর কোনো ভয় নেই। কিন্তু সত্যিই কি তাই?
হ্যাঁ, একথা সত্য যে বিশ্বের অনেক সংস্থাই করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, এমনকি অনেকের দাবি তারা ভ্যাকসিন বা Antidote তৈরিও করে ফেলেছেন। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে ভ্যাকসিন তৈরি হলেই কি সেটা তৎক্ষণাৎ মানুষের চিকিৎসায় কাজে লাগবে?
না, যারা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কথা শুনেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ছেন তারা হয় ' ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল' শব্দটা শোনেননি বা শুনলেও ঠিকমতো জানেন না। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কি সে বিষয়ে বিস্তারিত আর বলছি না, শুধু জেনে রাখুন ল্যাবরেটরিতে তৈরি কোনো ওষুধকে বাজারে ছাড়তে গেলে অনেকগুলো ধাপ পেরোতে হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এছাড়া ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেরও বেশ কয়েকটা ধাপ আছে এবং ব্যাপারটা সময়সাপেক্ষও বটে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়াও রিসার্চ স্পনসরশিপ, পেটেন্ট ইত্যাদি আরও অনেক ব্যাপার জড়িয়ে থাকে কোনো ওষুধকে বাজারজাত করতে।
এতসব ধাপ পেরিয়েও করোনা প্রতিরোধকারী কোনো ওষুধ বাজারে এলেও তার দাম হয়তো অগ্নিমূল্য হতে পারে। তখন কি হবে কেউ ভেবেছে? না কেউ ভাবেনি। বরং একশ্রেণীর মানুষ তো বর্তমানে নূন্যতম সতর্কতাটুকু অবলম্বন না করে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আনন্দে মেতে রয়েছেন।
করোনা ভাইরাস (কোভিড১৯) বারবার চরিত্র বদলেছে, যার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পর্যন্ত মাঝেমাঝেই ধন্দে পড়ে গিয়েছে। করোনা ভাইরাস (কোভিড১৯) ভাইরাস প্রতিরোধকারী কোনো ভ্যাকসিন এখনো মানুষের ওপর প্রয়োগ হয়নি বা বাজারেও আসেনি। কবে আসবে বলা মুশকিল। ভাইরাস তার চরিত্র বদল করলে ভ্যাকসিন কতটা কাজ করবে সে ব্যাপারেও সন্দেহ আছে।
তাই বর্তমানে ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি ও সংক্রমণ আটকানোটাই সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। একবার গোষ্ঠীসংক্রমণ ব্যাপকহারে শুরু হয়ে গেলে আটকানো মুশকিল।
আর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন মুড়িমুড়কি নয়, কারোর আগে থেকেই হৃদরোগ, লিভারের অসুখ, পরফাইরিয়া, সোরিয়াসিস, এলকোহলিজম এসব থাকলে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহারে বড়ো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমনকি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।
তাই সতর্কতা অবলম্বন করুন। সুস্থ থাকুন।
0 Please Share a Your Opinion.: